সাজেক / খাগড়াছড়ি থেকে যেভাবে সেন্টমার্টিন যাবেন

সাজেক থেকে যেভাবে সেন্টমার্টিন যাবেন

মেঘের সাজেক বেড়তে এসে অনেক পর্যটকের সেন্টমার্টিন যাবার প্ল্যান থাকে। কিন্তু কিভাবে যাবেন সেটা জানেন না অনেকেই। এইপর্বে আমরা আপনাদের জানাবো কিভাবে সাজেক বেড়িয়ে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন যাবেন। ঢাকা থেকে বা দেশের যেকোন স্থান থেকে কিভাবে সাজেক আসবেন সেটা জানার জন্য আমাদের সাজেক ভ্যালী এই পোষ্টটি পড়ে আসতে পারেন।

সাজেক টু টেকনাফ

সরাসরি টেকনাফ

মেঘের রাজ্য সাজেক থেকে সকাল ১০টার আর্মির স্কটে বের হয়ে চলে যাবেন খাগড়াছড়ি। দুপুরে পৌঁছে যাবেন খাগড়াছড়ি শহরে। খাগড়াছড়ির সকল পর্যটন স্পট ঘুরে চলে আসবেন খাগড়াছড়ির শহরের নারিকেল বাগান বাস ষ্ট্যান্ডের শান্তি পরিবহন বাস কাউন্টারে। এইখান থেকেই রাত ০৮টায় একটি বাস দৈনিক ছেড়ে যায় কক্সবাজারের টেকনাফের উদ্দ্যেশ্যে। যেহতু একটা বাসই ছাড়ে তাই চেষ্টা করবেন আগে থেকেই বাসের টিকেট কেটে রাখতে। ইন্সট্যান গিয়ে টিকিট নাও পেতে পারেন। আরেকটা কাজ করতে পারেন যেদিন খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক যাবেন, সেদিন খাগড়াছড়ি নেমেই শান্তি পরিবহন থেকে টেকনাফের টিকেট সংগ্রহ করে রাখবেন। খাগড়াছড়ি থেকে টেকনাফ পর্যন্ত আপনার খরচ হবে ৯০০ টাকা। রাত ০৮টায় রওনা দিয়ে সকাল ০৭-০৭.৩০মি এর মধ্যেই পৌঁছে যাবেন টেকনাফ। শান্তি পরিবহনের অগ্রীম টিকেট কাটার জন্য যোগাযোগ করুনঃ +8801855966804

চট্টগ্রাম হয়ে টেকনাফ

যদি খাগড়াছড়ি থেকে টেকনাফ যাওয়ার শান্তি পরিবহনের সরাসরি বাস টিকেট না পান, তাহলে প্রতি ঘন্টায় শান্তি পরিবহনের একটি বাস খাগড়াছড়ি থেকে চট্টগ্রামের উদ্দ্যেশ্যে ছেড়ে যায়। সে বাসে উঠে প্রথমে চলে যাবেন চট্টগ্রাম শহরে, এই বাস আপনাকে চট্টগ্রাম শহরের অক্সিজেন মোড় পর্যন্ত নিয়ে যাবে। অক্সিজেন মোড় থেকে একটি সিএনজি আথবা বাসে করে চলে যাবেন জিইসি গরিবুল্লাহ শাহ্ মাজারে অথবা দামপাড়ায় এইখান কিছু বাস চট্টগ্রাম ও টেকনাফ রুটে নিয়মিত চলাচল করে। চট্টগ্রাম থেকে টেকনাফ যেতে আপনাকে গুনতে হবে ৬০০ – ১২০০ টাকা।

দামপাড়া এবং গরিবুল্লাহ শাহ্ টেকনাফের টিকেট না পেলে চলে যাবেন, চট্টগ্রাম শহরের সিনেমা প্যালেস এলাকায়। সেখান থেকে রাত ১২ টায় সৌদিয়া এবং এস আলম পরিবহনের কিছু বাস ছেড়ে যায় টেকনাফের উদ্দ্যেশ্যে। সিনেমা প্যালেস থেকেও ভাড়া নিবে ৬০০-১২০০ টাকা।

খাগড়াছড়ি থেকে চট্টগ্রাম হয়ে সরাসরি সেন্টমার্টিন

বাংলাদেশে পর্যটকদের আন্তর্জাতিক মানের ভ্রমণ অভিজ্ঞতা দেয়ার জন্য চট্টগ্রাম থেকে সেন্টমার্টিন নৌ রুটে চালু হয়েছে পাঁচ তারকা মানে ক্রুজ শিপ, এম ভি বে ওয়ান। অক্টোবরের শেষ থেকে এপ্রিলের শুরু পর্যন্ত এই শিপ এই রুটে চলাচল করে। চট্টগামের নেভাল বিচ এলাকার ১৫ নং ওয়াটার বাস টার্মিনাল থেকে সপ্তাহে ৩ দিন এ শিপ ছেড়ে যায়। চট্টগ্রাম থেকে রাত ১০টায় ছেড়ে যায় এ শিপ এবং সকাল ০৭.০০ টায় সেন্তমার্টিন পৌছায়। সাজেক ভ্রমণ করে যারা এই ক্রুজ শিপে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন যেতে চান, তারা প্রথমে সাজেক থেকে চলে আসবেন খাগড়াছড়ি শহরে। খাগড়াছড়ি শহরের নারিকেল বাগান বাস ষ্ট্যান্ড থেকে শান্তি পরিবহনে করে চলে যাবেন চট্টগ্রাম শহরে। শান্তি পরিবহন আপনাকে অক্সিজেন মোড়ে নামিয়ে দিবে। সেখান থেকে সি এন জি নিয়ে চলে যাবেন নেভাল-এ। হাতে সময় থাকলে ঘুরে আসতে পারেন পতেংগা সমুদ্র সৈকত থেকে। বিভিন্ন ক্লাস বেদে ভাড়া ৪০০০-৬০০০০ টাকা। এম ভি বে ওয়ানের অগ্রীম টিকেটের জন্য যোগাযোগ করুনঃ +8801615162600

খাগড়াছড়ি থেকে কক্সবাজার হয়ে সরাসরি সেন্টমার্টিন

অনেকেই সাজেক থেকে বেরিয়ে গিয়ে একইসাথে কক্সবাজার এবং সেন্টমার্টিন ঘুরতে চান। তারা প্রথমে সাজেক থেকে চলে আসবেন খাগড়াছড়ি শহরে। খাগড়াছড়ি থেকে প্রতিদিন রাত ০৮.০০ টায় এবং রাত ১০.০০ টায় দুটি বাস কক্সবাজারের উদ্দ্যশ্যে ছেড়ে যায়। যেহেতু এই রুটের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে তাই ইন্সট্যান টিকেট না পাবার সম্ভ্যনাই বেশী আগে থেকেই এ বাসের অগ্রীম বাসের টিকেট করে নিবেন। সকালেই আপনাকে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে পৌঁছে দিবে। সরাসরি কক্সবাজারের টিকেট না পেলে, খাগড়াছড়ি ঠেকে চলে যান চট্টগ্রাম শহরে। প্রতি এক ঘন্টা পর পর শান্তি পরিবহনের বাস খাগড়াছড়ি থেকে চট্টগ্রামের উদ্দ্যেশ্যে ছেড়ে যায়। চট্টগ্রাম শহরের অক্সিজেন মোড়ে এ বাস আপনাকে নামিয়ে দিবে। চট্টগ্রাম নেমে নরমাল বাসে কক্সবাজার যেতে চাইলে চলে যান বহদ্দার হাট বাস টার্মিনালে, সেখান থেকে প্রতি ঘন্টায় বিভিন্ন বাস কক্সবাজারে উদ্দ্যেশ্যে ছেড়ে যায়। আর ভালো বাসে যেতে চাইলে অক্সিজেন মোড়ে নেমে চলে যাবেন গরিবুল্লাহ শাহ্ মাজার সেখান থেকে বেশ কিছু বাস কক্সবাজারে উদ্দ্যেশ্যে ছেড়ে যায়। কক্সবাজার থেকে বিলাশ বহুল এম ভি কর্ণফুলি এক্সপেস শিপে করে আপনি যেতে পারেন সেন্টমার্টিন। কক্সবাজার শহরের উত্তর নুনিয়াছড়া BIWTA এর ঘাট থেকে প্রতিদিন সকাল ০৭টায় ছেড়ে যায় এমভি কর্ণফুলি এক্সপ্রেস। কর্ণফুলী এক্সপ্রেস কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিন পৌছাতে সময় লাগে মাত্র ০৫ ঘন্টা। বিভিন্ন ক্লাস বেদে ভাড়া ৩০০০-২৫০০০ টাকা। এম ভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেসের টিকিটের জন্য যোযোগ করুনঃ +8801615162600

কর্নফুলী এক্সপেসে যেতে না চাইলে, ভোর ছ’টায় কক্সবাজার থেকে টেকনাফের উদ্দ্যশ্যে রওনা দিয়ে দিতে হবে। কক্সবাজার থেকে হাইস, জিপ, জিপ, সি এন জি করে টেকনাফ যেতে পারবেন। বাসে গেলে খরচ পড়বে ১৮০-২২০ টাকা। আর সি এন জিতে গেলে খরচ পড়বে ২৫০-৩০০টাকা।

টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন

প্রতিবছরে নভেম্বর মাস থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত প্রতিদিন টেকনাফ টু সেন্টমার্টিন যাত্রীবাহি শিপ যাওয়া আসা করে। টেকনাফ টূ সেন্টমার্টিন রুটের উল্লখ্যেযোগ্য জাহাজ হচ্ছে বে ক্রুজ, কেয়ারী সিন্দাবাদ, কেয়ারী ক্রুজ এন্ডা ডাইন, আটলান্টিক, রাজহংস, পারিজাত, ফারহান ইত্যাদি। টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যেতে সময় লাগে ০২.০০ – ০২.৩০ ঘন্টা। প্রতিদিন সকাল ০৯.০০-০৯.৩০ টার মধ্যে টেকনাফের জেটিঘাট হতে জাহাজ গুলো সেন্টমার্টিন দ্বীপের উদ্দ্যশ্যে ছেড়ে যায়। এবং সেন্টমার্টিন থেকে ফেরত আসে বিকাল ০৩.০০-০৩.৩০ টার মধ্যে। শিপের মান এবং ক্লাস অনুযায়ী ভাড়া নির্ধারন করা আছে। শিপের টিকেট যাওয়া আসা সহ একসাথে কাটতে হয়। তাই টিকেট করার সময় কবে আসবেন সেটা উল্ল্যেখ করে সে হিসেবে টিকেট করবেন। টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন জাহাজবেদে ভাড়া পড়বে ৯০০-১৬০০ টাকা।

এপ্রিল মাসের শুরুর দিকেই টেকনাফ সেন্টমার্টিন রুটে জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এপ্রিল এর পর থেকেই সাগর উত্তাল থাকে, তাই এই সময় ভ্রমণ নিরাপদ নয়। তবে কেউ যদি উত্তাল সাগর পাড়ি দিয়ে সেন্টমার্টিন যেতে চান তারা টেকনাফ নামার বাজার জেটি ঘাট থেকে স্পীড বোট, ট্রলার এবং মালবাহী ট্রলারে সেন্টমার্টিন যেতে পারবেন। ট্রলারে গেলে সময় লাগবে প্রায় ০৩ ঘন্টা। ভাড়া পড়বে ২৫০-৩০০ টাকা। সময় অনুযায়ী ভাড়া কমবেশী হতে পারে।

সেন্টমার্টিনের হোটেল ও রিসোর্ট

শান্তিনিকেতন বিচ রিসোর্ট
অবস্থানঃ পশ্চিম বিচ
যোগাযোগঃ

সায়রী ইকো রিসোর্ট
অবস্থানঃ নজরুল পাড়া, দক্ষিন বিচ
যোগাযোগঃ

আটলান্টিক রিসোর্ট
অবস্থানঃ পশ্চিম বিচ
যোগাযোগঃ

ড্রীম নাইট রিসোর্ট
অবস্থানঃ পশ্চিম বিচ
যোগাযোগঃ

নীল দিগন্ত রিসোর্ট
অবস্থানঃ দক্ষিন বিচের কোনায়
যোগাযোগঃ

ব্লু লেগুন রিসোর্ট
অবস্থানঃ পশ্চিম বিচ
যোগাযোগঃ

হানিমুন ইকো রিসোর্ট
অবস্থানঃ পশ্চিম বিচ
যোগাযোগঃ

নিসর্গ রিসোর্ট
অবস্থানঃ পশ্চিম বিচ
যোগাযোগঃ

সীমানা পেরিয়ে ইকো রিসোর্ট
অবস্থানঃ পশ্চিম বিচ
যোগাযোগঃ

সেইলর মুন ইকো রিসোর্ট
অবস্থানঃ পশ্চিম বিচ
যোগাযোগঃ

সেন্টমার্টিনের সকল সার্ভিস, ফ্যামেলী, কাপল, সলো এবং কর্পোরেট ট্যুরের জন্য যোগাযোগ করুন +8801615162600

সেন্টমার্টিন ভ্রমণে যে বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখবেন

  • প্লাস্টিক ও ময়লা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা আমাদের দ্বায়িত্ব।
  • সেন্টমার্টিনে কেনাকাটা করতে অবশ্যই দরদাম করবেন।
  • সেন্টমার্টিন সমুদ্র সৈকতে কতগুলি বিপদজনক জায়গা রয়েছে সে সকল জায়গা দিয়ে সমুদ্রে নামবেন না।
  • সাজেক থেকে সেন্টমার্টিন ভ্রমনের জন্য আগে থেকেই সব প্ল্যান করুন
  • বাস, শিপের টিকেট এবং রিসোর্ট আগে থেকেই বুকিং দিয়ে রাখুন।
  • কম খরচে ভ্রমণ করতে চাইলে ছুটির দিন এড়িয়ে চলুন।
  • সেন্টমার্টিন বাংলাদেশের একটি অন্যতম সম্পদ। তাই দ্বীপের ক্ষতি হয় এমন কিছু দয়া করে করবেন না।
  • সাজেকের জন্য রবি / এয়ারটেল সিম সঙ্গে রাখুন, সেন্টমার্টিনেও রবি ও এয়ারটেলের নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়।
  • সেন্টমার্টিন দ্বীপে নিয়মিত বিজিবির টহল চলে। অনেক সময় পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে রাত ১২.০০ টার পর বিচে ঘুরাঘুরি করতে নিষেধ করেন।
Scroll to Top